খেজুর এর পুষ্টিগুণ, উপকারিতা ও সঠিক খাওয়ার নিয়ম
খেজুর কী?
খেজুর (Date) একটি
প্রাকৃতিকভাবে মিষ্টি ও পুষ্টিকর ফল,
যা মূলত মরু অঞ্চলে জন্মায়। এটি প্রাচীনকাল থেকেই মানবজাতির খাদ্য তালিকায়
গুরুত্বপূর্ণ স্থান দখল করে আছে। ইসলাম ধর্মে খেজুরের বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে, বিশেষ করে রমজান
মাসে ইফতারের সময় এটি একটি অপরিহার্য উপাদান।
খেজুরের বৈজ্ঞানিক নাম
খেজুরের বৈজ্ঞানিক নাম হলো Phoenix dactylifera। এটি Arecaceae গোত্রের
অন্তর্ভুক্ত একটি গ্রীষ্মপ্রধান ফল।
খেজুর উৎপাদনের প্রক্রিয়া
খেজুর গাছ গরম ও শুষ্ক জলবায়ুতে ভালো
জন্মায়। এটি বীজ অথবা চারা থেকে উৎপাদিত হয়। গাছে পুরুষ ও স্ত্রী ফুল থাকে, তাই পরাগায়ণ
প্রক্রিয়াটি গুরুত্বপূর্ণ। ফল ধরার পর ধাপে ধাপে তা পাকে এবং পরে শুকিয়ে সংরক্ষণ
করা হয় অথবা সরাসরি খাওয়ার উপযোগী হয়।
খেজুরের পুষ্টিগুণ
খেজুরে রয়েছে উচ্চমাত্রার
কার্বোহাইড্রেট, আঁশ, খনিজ পদার্থ ও
ভিটামিন।
প্রতি ১০০ গ্রাম খেজুরে পাওয়া যায়:
- শক্তি: ২৭৭ কিলোক্যালরি
- কার্বোহাইড্রেট: ৭৫ গ্রাম
- আঁশ: ৭ গ্রাম
- প্রোটিন: ২ গ্রাম
- পটাশিয়াম: ৬৫০ মি.গ্রা.
- আয়রন, ম্যাগনেশিয়াম, ভিটামিন বি৬ ও অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট
খেজুরের উপকারিতা
- দ্রুত শক্তি জোগায় ও দুর্বলতা কমায়
- হজমে সহায়তা করে,
কোষ্ঠকাঠিন্য প্রতিরোধ করে
- রক্তশূন্যতা দূর করতে সাহায্য করে
- হৃদপিণ্ড ও স্নায়ুতন্ত্রকে সক্রিয় রাখে
- অন্তঃসত্ত্বা নারীদের জন্য উপকারী
- মানসিক চাপ ও ক্লান্তি দূর করে
- হাড় ও দাঁতের গঠনে সহায়তা করে
খেজুর খাওয়ার সঠিক নিয়ম
- সকালে খালি পেটে ২-৩টি খেজুর খাওয়া ভালো
- দুধের সঙ্গে খেজুর মিশিয়ে খেলে শক্তি বাড়ে
- রোজায় ইফতারে খেজুর খাওয়া সুন্নত ও স্বাস্থ্যকর
- দিনে ৫-৬টির বেশি না খাওয়াই ভালো
সতর্কতা
- ডায়াবেটিস রোগীদের চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে খাওয়া উচিত
- অতিরিক্ত খাওয়ার ফলে ওজন বৃদ্ধি পেতে পারে
- শিশুদের জন্য অল্প পরিমাণে খাওয়া নিরাপদ
খেজুর একটি প্রাকৃতিক সুপারফুড, যা পুষ্টিগুণে
ভরপুর। এটি দৈনন্দিন খাদ্য তালিকায় যুক্ত করলে শরীর ও মন দুটোই সুস্থ থাকে। তবে
যেকোনো খাবারের মতো খেজুরও পরিমিত পরিমাণে খাওয়াই সর্বোত্তম।
Post a Comment